Wellcome to National Portal
বাংলা একাডেমি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২১st August ২০২৪

পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

ভূমিকা

বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির লক্ষ্য বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও ঐতিহ্য বিষয়ক গবেষণা এবং উন্নয়ন সাধন। বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশ এবং বিশ্বব্যাপী বাঙালি সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারে বাংলা একাডেমির ভূমিকা অনস্বীকার্য। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলা একাডেমি জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় নানাধরনের গ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে জ্ঞানমনস্ক মানবিক মূল্যবোধ-সম্পন্ন সমাজ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগের পরিচিতি

‘বাংলা একাডেমি আইন ২০১৩’-এর ১২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে বাংলা একাডেমির সার্বিক কর্মকাণ্ড ৮টি বিভাগের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। তন্মধ্যে বিক্রয়, বিপণন ও পুনর্মুদ্রণ বিভাগ অন্যতম। পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগ এই বিভাগের অধীন একটি উপবিভাগ হিসেবে বৃহৎ পরিসরে কাজ করছে। ২০১৩ সালে পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগ গঠিত হওয়ার বহু পূর্ব থেকেই পুনর্মুদ্রণের কাজ চলমান, সম্ভবত ১৯৯২ সালে পুনর্মুদ্রণ প্রকল্পের মাধ্যমে এর যাত্রা শুরু। তখন পুনর্মুদ্রণ ছিল প্রাতিষ্ঠানিক, পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ বিভাগের অধীন একটি সেল।

পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগের কার্যাবলি

বাংলা একাডেমির বিভিন্ন বিভাগ/উপবিভাগ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের গবেষণাধর্মী, সৃজনশীল, মননশীল, পাঠ্য ও পাঠ্যসহায়ক, সম্পাদিত, সংকলিত, জীবনীগ্রন্থ, অনূদিত গ্রন্থ এবং অভিধান ও কোষগ্রন্থ প্রকাশ করে। প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে যেসব গ্রন্থের বিক্রয় নিঃশেষিত, পাঠকের কাছে অধিকতর উপযোগী এবং জনপ্রিয় ও সমাদৃত, পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগ সেই সব গ্রন্থ পুনরায় মুদ্রণের যাবতীয় নিয়মতান্ত্রিক ও ধারাবাহিক কার্যক্রম সম্পাদন করে।

পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগ অমর একুশে বইমেলা-সহ বছরব্যাপী বিক্রয়কেন্দ্রে ক্রেতাসাধারণের চাহিদানুসারে বইয়ের জোগান দেয়। কেবল অচঅ উপলক্ষ্যে বছরজুড়ে নির্দিষ্ট কয়েকটি বই প্রকাশ করা পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগের লক্ষ্য নয়। বরং লেখক, গবেষক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পাঠক-ক্রেতার চাহিদা অনুসারে পুনর্মুদ্রণ পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রকাশিত বই পুনরায় ভোক্তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগ কাজ করে।

পুনর্মুদ্রণ প্রক্রিয়া

গ্রন্থ পুনর্মুদ্রণের ক্ষেত্রে ২টি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। প্রথমত, একাডেমির বিক্রয় ও বিপণন উপবিভাগ বাজার পর্যবেক্ষণ পূর্বক ক্রেতা-সাধারণের চাহিদা অনুযায়ী চাহিদাসম্পন্ন বই পুনর্মুদ্রণের জন্য তালিকা তৈরি করে পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগে পাঠায়। পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগ উক্ত তালিকা অনুযায়ী গ্রন্থ পুনর্মুদ্রণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। দ্বিতীয়ত, বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত গ্রন্থের লেখক/সম্পাদক/অনুবাদক অথবা লেখক/সম্পাদক প্রয়াত হলে তাঁদের প্রকৃত উত্তরধিকারীগণ গ্রন্থ পুনর্মুদ্রণের জন্য মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেন। পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগ উক্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একাডেমির গ্রন্থভান্ডারে সংরক্ষিত গ্রন্থটির মজুত, পাঠক চাহিদা, বার্ষিক গড় বিক্রি, বিক্রয় কমিশন (৫০% বা ৬০% কমিশনে বিক্রয় হয়েছে কি না) ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে গ্রন্থটির প্রথম প্রকাশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগ/উপবিভাগের অভিমত সংগ্রহ ও সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে এই পক্রিয়ায় পুনর্মুদ্রণের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়।

কী ধরনের বই পুনর্মুদ্রণ করা হয়

১. প্রধানত সব ধরনের অভিধান (বাংলা-ইংরেজি, ইংরেজি-বাংলা, ব্যবহারিক বাংলা, আধুনিক বাংলা, বাংলা-বানান, বাঙলা উচ্চারণ, ছোটদের অভিধান ইত্যাদি)

২. উল্লেখযোগ্য রচনাবলি (নজরুল রচনাবলী, রোকেয়া রচনাবলী, শহীদুল্লাহ্ রচনাবলী ইত্যাদি)

৩. জেলাভিত্তিক লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা সিরিজ

৪. বঙ্গবন্ধুর নিজস্ব রচনা (কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন, PRISON DIARIES)

৫. বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত জন্মশতবর্ষ গ্রন্থমালা

৬. ভাষা শহিদদের জীবনী

৭. মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক

৮. ইতিহাস, ধর্ম, দর্শন ও আইন বিষয়ক

৯. চিরায়ত শিশুকিশোর-সাহিত্য ও আনন্দপঠন সিরিজ (মা, আফ্রিকার রূপকথা, জাপানি গল্পগুচ্ছ, গালিভারের ভ্রমণ কাহিনি, আরব্য রজনি, ডাইনোসর ইত্যাদি)

১০. পরিভাষা (প্রশাসনিক পরিভাষা, হোমিওপ্যাথিক পরিভাষা, ব্যবসায় পরিভাষা ইত্যাদি)

১১. কোষগ্রন্থ (আইনকোষ, পার্লামেন্টারি শব্দকোষ, বাএ নজরুল শব্দকোষ ইত্যাদি)

১২. এছাড়াও প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ সম্পাদন, পরিমার্জন ও পরিবর্ধনপূর্বক সংস্করণ প্রকাশ (আধুনিক কীটতত্ত্ব, ভাষা : চিন্তায় ও কর্মে, প্রাণের মিনার শহিদ মিনার)

উপসংহার

পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগ সারাবছর কর্মমুখর, গতিশীল ও প্রাণবন্ত একটি উপবিভাগ। এই উপবিভাগ থেকে প্রতি বছর পুনর্মুদ্রিত/সংস্করণ হিসেবে ৬০-৭০টি গ্রন্থ নতুন করে আলোর মুখ দেখে। বাংলা একাডেমি প্রেসের মুদ্রণ-বাঁধাই কাজের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ পুনর্মুদ্রণ উপবিভাগ থেকে সম্পন্ন হয়। পুনর্মুদ্রণ হলো বাংলা একাডেমির আয়বর্ধক ও আর্থিকভাবে লাভজনক একটি খাত। বিক্রয়কেন্দ্রে বিক্রয়লব্ধ অর্থের শতকরা ৯০-৯৫ ভাগ পুনর্মুদ্রিত বই বিক্রয় থেকে অর্জিত হয়। এ খাতের অর্থ বই পুনর্মুদ্রণ ও একাডেমির জরুরি প্রয়োজনে ব্যয় করা হয়।