ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বাংলাদেশের সারস্বত সাধনার অন্যতম পথিকৃৎ। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অবিভক্ত চব্বিশ পরগণা জেলার পেয়ারা গ্রামে ১০ জুলাই ১৮৮৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯১০ সালে সিটি কলেজ, কলকাতা থেকে সংস্কৃতে সম্মান-সহ বি.এ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক দর্শনতত্ত্বে এম.এ (১৯১২) ডিগ্রি অর্জন। ১৯২৬ সালে ফ্রান্স ও জার্মানী গিয়ে বৈদিক যুগের সংস্কৃত, বৌদ্ধ যুগের সংস্কৃত, তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব, তিব্বতী এবং প্রাচীণ পারসিক ভাষা পড়া শুরু করেন। ১৯২৮ সালে ‘চর্যাপদে’র কথ্য ভাষা নিয়ে প্যারিসের সরবোণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৩৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও রিডার হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৪৪ সালে অবসর গ্রহণের পর ১৯৫৩ – ১৯৫৫ সালে তিনি পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ফরাসি ভাষার খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসাবে কাজ করেন। বিভিন্ন ভাষায় ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্’র দখল ছিল অসাধারণ ও অসামান্য । উর্দু ভাষার অভিধান প্রকল্পেও তিনি সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। পরে পূর্ব পাকিস্তানি ভাষার আদর্শ অভিধান প্রকল্পের সম্পাদক হিসেবে বাংলা একাডেমিতে যোগ দেন। ১৯৬৩ সালে বাংলা একাডেমি কর্তৃক গঠিত বাংলা একাডেমির পঞ্জিকার তারিখ বিন্যাস কমিটির সভাপতি নিযুক্ত হন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলা পঞ্জিকা একটি আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত রূপ পায়।
ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্’র উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো- বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান, ভাষা ও সাহিত্য, বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত, দীওয়ানে হাফিজ, রুবাইয়াত-ই-ওমর খৈয়াম, বিদ্যাপতি শতক, বাংলা সাহিত্যের কথা (২ খণ্ড), বাংলা ভাষার ব্যাকরণ । তিনি ১৩ জুলাই ১৯৬৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।