Wellcome to National Portal
বাংলা একাডেমি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/১লা ফাল্গুন ১৪২৫ অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৩তম দিন। মেলা চলে বেলা ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৭২টি। বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় কবি রফিক আজাদ : শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কবি অসীম সাহা, কবি ফারুক মাহমুদ এবং কবি জাফর আহমদ রাশেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার।


প্রকাশন তারিখ : 2019-02-13

আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/১লা ফাল্গুন ১৪২৫ অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৩তম দিন। মেলা চলে বেলা ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৭২টি।

বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় কবি রফিক আজাদ : শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কবি অসীম সাহা, কবি ফারুক মাহমুদ এবং কবি জাফর আহমদ রাশেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার।

প্রাবন্ধিক বলেন, বিশ শতকের ষাটের দশকে বাংলাদেশের কবিতাধারার যে নবীন ও দীপ্র, ক্ষুব্ধ ও দীপ্র কবি প্রবংশের আবির্ভাব, রফিক আজাদ তাঁদের অন্যতম। সংক্ষুব্ধ ষাটের দশকে প্রথম হাজিরা দিয়ে তিনি অতিক্রম করেছেন পঞ্চাশের অধিক সৌরবর্ষ। দীর্ঘ এই সময়খণ্ডে, নিরন্তর সাধনায়, কবি রফিক আজাদ নির্মাণ করেছেন নিজস্ব এক শিল্পভুবন; বিষয়-বৈচিত্র্যে এবং প্রকরণ-প্রসাধনে সাজিয়ে তুলেছেন প্রাতিস্বিক এক কবিতাভবন। কাব্যযাত্রার সূচনালগ্নে সমাজ ও মানুষ সম্পর্কে নির্লিপ্ত থাকলেও, ক্রমেই তিনি সংলগ্ন হয়েছেন বৃহত্তর জাতিসত্তার সঙ্গে, স্বদেশের মৃত্তিকা ও মানুষের সঙ্গে। সন্দেহ নেই, ব্যক্তির অন্তর্গত উপলব্ধিই কবি রফিক আজাদের কবিতার মূল সুর, তবে ব্যক্তির সীমানা ছাড়িয়ে তাঁর কবিতায় নীরবে ভেসে ওঠে স্বদেশের মুখ, তাঁর কণ্ঠেই শোনা যায় প্রত্ন-নৃগোষ্ঠীর যাপিত জীবনের সুর আর স্বর। তিনি বলেন, বিষয়-গৌরবে যেমন, তেমনি প্রকরণ-পরিচর্যায়ও কবি রফিক আজাদ স্বয়ং-স্বতন্ত্র এবং অনুপম। কবিতায় উপমা রূপক চিত্রকল্প নির্মাণে তিনি রেখেছেন স্বাতন্ত্র্যের স্বাক্ষর, শব্দ-ব্যবহারে তিনি নিয়ত সৃষ্টিশীল ও পরীক্ষাপ্রিয়। তাঁর কবিতা পাঠকের ভাবনা-বিশ্বকে আলোড়িত করে, চেতনায় তোলে অভিঘাত। কেন্দ্রের পরিবর্তে তাঁর কবিতা প্রান্তের জয়গানে। এসব প্রবণতাই সমকালীন বাংলা কবিতায় তাঁকে করে তুলেছে বিশিষ্ট ও ব্যতিক্রমী।

আলোচকবৃন্দ বলেন, রফিক আজাদ বাংলা কবিতায় এক অনিবার্য নাম। তাঁর কবিতা ব্যক্তিক ও সমষ্টিক বোধের ধারক। শব্দকে কী করে চেতনার গভীরতম উপলব্ধির বাহক করে তোলা যায়-রফিক আজাদের কবিতা তার এক শৈল্পিক দৃষ্টান্ত। তিনি সামরিক শাসনের বুটের তলায় চাপা পড়া জীবনযৌবনের রুদ্ধদ্বারকে মুক্ত করার সাধনা করেছেন কবিতায়। তাঁরা বলেন, রফিক আজাদ একজন বিরল সম্পাদকও বটে। বাংলা একাডেমির সাহিত্যপত্র উত্তরাধিকার, রোববার, ঘরে বাইরে ইত্যাদি সাময়িকপত্র সম্পাদনার মধ্য দিয়ে তিনি নবীন লেখকের স্বর আবিষ্কার করেছেন। গদ্যে ততোটা সক্রিয় না হলেও তাঁর আত্মজীবনী কোনো খেদ নেই বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি ভুবনের এক প্রামাণ্য দলিল হয়ে রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে রশীদ হায়দার বলেন, রফিক আজাদ মানেই জীবন, তারুণ্য এবং সুন্দরের প্রতি পক্ষপাত। তাঁর মতো বিশুদ্ধ কবির আবির্ভাব বাংলাদেশের কবিতার জগতকে করেছে ঋদ্ধ। কবিসত্তার বাইরে তাঁর ব্যক্তিসত্তাও ছিল সমান আকর্ষণীয়। ব্যক্তিগতজীবনে তাঁর মতো দেশপ্রেমিক, বন্ধুবৎসল, উদার-মানবিক মানুষের সন্ধান পাওয়া সত্যিই কঠিন ব্যাপার। তিনি বলেন, বাংলা একাডেমি রফিক আজাদের সাতাত্তরতম জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণের আয়োজন করে কবিতাপ্রেমী ও সাহিত্যানুরাগী সকলের কৃতজ্ঞতাভাজন হয়েছে।

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন শহীদ ইকবাল, মণিকা চক্রবর্তী, সঞ্জীব পুরোহিত, ফারুক সুমন এবং আহম্মেদ শরীফ।
কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি মুহাম্মদ সামাদ এবং টোকন ঠাকুর। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রফিকুল ইসলাম এবং নাসিমা খান বকুল। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফেরদৌস আরা, কাজী মুয়ীদ শাহরিয়ার সিরাজ জয়, মিজান মাহমুদ রাজীব, ফারহানা শিরিন এবং তানজিনা করিম স্বরলিপি। নৃত্য পরিবেশন করেন সৌন্দর্য প্রিয়দর্শিনী ঝুম্পার পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘জলতরঙ্গ ডান্স কোম্পানি’-এর নৃত্যশিল্পীবৃন্দ। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন অনির্বাণ সরকার (তবলা), সুভেল খান শিশু (কী-বোর্ড), শফিজুল আখন্দ পাপ্পু (অক্টোপ্যাড), মো. আনিসুর রহমান খান (গীটার) এবং রাশেদ হোসেন (গীটার)।

আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি :
আগামীকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/২রা ফাল্গুন ১৪২৫ বৃহস্পতিবার। মেলা চলবে বেলা ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত।

বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ডিজিটাল বাংলাদেশে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও বিজ্ঞানভাবনা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন রেজাউর রহমান, আবদুল কাইয়ুম এবং অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ