সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/১৬ ফাল্গুন ১৪২৫ বৃহস্পতিবার। মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলার শেষ দিন। গ্রন্থমেলা চলে বেলা ২:৩০টা থেকে রাত রাত ৯:৩০টা পর্যন্ত। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৫৩টি এবং এই পর্যন্ত (১-২৮) পর্যন্ত নতুন বই এসেছে ৪,৬৮৫টি।
প্রকাশন তারিখ
: 2019-02-28
আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/১৬ ফাল্গুন ১৪২৫ বৃহস্পতিবার। মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলার শেষ দিন। গ্রন্থমেলা চলে বেলা ২:৩০টা থেকে রাত রাত ৯:৩০টা পর্যন্ত। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৫৩টি এবং এই পর্যন্ত (১-২৮) পর্যন্ত নতুন বই এসেছে ৪,৬৮৫টি।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯’এর সমাপনী অনুষ্ঠান :
সন্ধ্যা ৬:৩০টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯’-এর সদস্য-সচিব ড. জালাল আহমেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি। অন্যানের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন নিরাপদ মিডিয়ার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, গ্রন্থমেলা উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য দেশবাসীর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। ২০১৯-এর গ্রন্থমেলা অতীতের যেকোনোবারের তুলায় ছিল বিস্তৃত, ব্যাপক ও বর্ণাঢ্য। প্রথমবারের মতো গ্রন্থমেলার আয়োজনে এবার যুক্ত ছিল- লেখক বলছি মঞ্চ, কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, বাচিকশিল্পীদের পরিবেশনা এবং নান্দনিক সমাপনী আয়োজন। তবে মেলার শেষ মুহূর্তে আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রকাশকদের যে ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি করেছে সে জন্য আমরা সমবেদনা ও দুঃখ প্রকাশ করছি। এই দুর্যোগ আবারও প্রমাণ করেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা আয়োজনের জন্য স্থায়ী মেলা মাঠ বরাদ্দের কোনো বিকল্প নেই যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধের সার্বিক ব্যবস্থা থাকবে।
প্রতিবেদন উপস্থাপন করে ড. জালাল আহমেদ বলেন, আজ ২৮শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলা একাডেমি আনুমানিক ২ কোটি ১৫ লাখ ৯১ হাজার টাকার বই বিক্রি করেছে। ২৮শে ফেব্রুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত স্টল মালিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং আজকের সম্ভাব্য বিক্রি যুক্ত করলে বলা যায় যে, এবার বইমেলায় গতবারের বিক্রির তুলনায় ১০% বেশি বিক্রি হয়েছে (২০১৮’র গ্রন্থমেলায় বিক্রির পরিমাণ ছিল ৭০ কোটি ৫০)। মেলায় প্রকাশিত ৪,৬৮৫টি বইয়ের মধ্যে মানসম্পন্ন বইয়ের সংখ্যা ১১৫১টি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কে এম খালিদ এমপি বলেন, একুশে গ্রন্থমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। এই মেলা সারাদেশের জ্ঞান জগতে যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে তা অবিস্মরণীয়। এটি শুধু বিকিকিনির মেলা নয় বরং একটি জাতীয় সাংস্কৃতিক উৎসবে রূপ নিয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি বলেন, অমর একুশে গ্রন্থমেলা এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এক বিশাল জ্ঞানোৎসব। এবারের মেলা দেশ-বিদেশের জ্ঞানপিপাসু মানুষের মনে যে সাড়া জাগিয়েছে তা প্রমাণ করে এদেশের মানুষ জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, একুশে গ্রন্থমেলায় মানুষের মাঝে বই নিয়ে যে আগ্রহ দেখা গেছে তাতে প্রমাণ হয় প্রযুক্তির ব্যাপক বিকাশেও মুদ্রিত বইয়ের গুরুত্ব কিছুমাত্র হ্রাস পায়নি।
কবি নির্মলেন্দু গুণকে কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯ প্রদান
অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের যে কোনো শাখায় সার্বিক অবদানের জন্য কবি নির্মলেন্দু গুণকে কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯ প্রদান করা হয়। পুরস্কারের অর্থমূল্য ২,০০,০০০.০০ (দুই লক্ষ) টাকা।
গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার ঘোষণা
২০১৮ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য কথাপ্রকাশ-কে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০১৯, ২০১৮ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে গুণমান ও শৈল্পিক বিচারে সেরা গ্রন্থ বিভাগে গোলাম মুরশিদের বিদ্রোহী রণক্লান্ত : নজরুল-জীবনী গ্রন্থের জন্য প্রথমা প্রকাশনকে, মইনুদ্দীন খালেদের মনোরথে শিল্পের পথে গ্রন্থের জন্য জার্নিম্যান বুক্সকে এবং মারুফুল ইসলামের মুঠোর ভেতর রোদ গ্রন্থের জন্য চন্দ্রাবতী একাডেমিকে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০১৯ প্রদান করা হয়। ২০১৮ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেডকে রোকনুুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০১৯ এবং ২০১৯ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মধ্যমা (এক ইউনিট), বাতিঘর (বহু ইউনিট), পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.-(প্যাভেলিয়ন)-কে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০১৯ প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত সকল প্রকাশককে ২৫,০০০.০০ টাকার চেক, সনদ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন- সলিমুল্লাহ খান, সাগুফতা শারমিন তানিয়া, সুমন রহমান, মিছিল খন্দকার ও নাহিদা আশরাফী।
মেলার মূল মঞ্চে সাংস্কৃতিক আয়োজনে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফরিদা পারভীন, আকরামুল ইসলাম, মহিউজ্জামান চৌধুরী এবং ইয়াসমিন মুশতারী। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন- দেবেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় (তবলা), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), দৌলতুর রহমান, এস.এম. রেজা বাবু (বাংলা ঢোল) এবং শেখ জালালউদ্দিন দোতারা)।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে সমাপনী সাংস্কৃতিক আয়োজন :
মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯-এর সমাপনী আয়োজনের অংশ হিসেবে আজ রাতে স্বাধীনতাস্তম্ভ সংলগ্ন মঞ্চে সাংস্কৃতিক আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে কবিতাপাঠ করবেন প্রখ্যাত কবি নির্মলেন্দু গুণ। সাংস্কৃতিক পর্বে রয়েছে শিল্পী লিলি ইসলামের পরিচালনায় ‘উত্তরায়ন’-এর পরিবেশনা। সবশেষে রয়েছে অমর একুশে গ্রন্থশেলা ২০১৯-এর মূল প্রতিপাদ্য বিজয় : ১৯৫২ থেকে ১৯৭১, নবপর্যায়-কে ভিত্তি করে লেজার শো প্রদর্শন।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ