বাংলা একাডেমির ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে আজ ১৮ই অগ্রহায়ণ ১৪২৭/৩রা ডিসেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
সকাল ০৯:৩০টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও বাংলা একাডেমির পতাকা উত্তোলন করা হয়। ১০:০০টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহিদদের স্মৃতির প্রতি এবং ১০:৩০টায় বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্-র সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা
সকাল ১১:০০টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সবার আগে সংস্কৃতি সবার সঙ্গে সংস্কৃতি শীর্ষক বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা-২০২০ প্রদান করেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ। স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সম্প্রতি প্রয়াত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
স্বাগত বক্তব্যে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ১৯৫৫ সালের ৩রা ডিসেম্বর বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সুরক্ষা ও বিকাশের জন্য। ছয় দশকের পরিক্রমায় আমরা এ-কথা দৃপ্তকণ্ঠে উচ্চারণ করতে পারি- বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সুরক্ষা বিধানের একাডেমিক দায়িত্ব পেরিয়ে বাংলা একাডেমি আজ আক্ষরিক অর্থেই বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক-প্রতিষ্ঠান।
একক বক্তা সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, সংস্কৃতি আপনি গড়ে উঠে, সংস্কৃতিকে বানানো যায় না। বাঙালির সংস্কৃতি জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিস্তৃত অর্থনীতি, রাজনীতি, ক‚টনীতি, সমাজ, ধর্ম। এর যা কিছু বাঙালি সংস্কৃতির প্রতিক‚ল, তার স্থান এখানে হবে না। তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসনামলে বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের দুই দশকের সংগ্রামকে তাই চিহ্নিত করা যায় ভাষা-আন্দোলন নামক একটি সাংস্কৃতিক সংগ্রামের পরিণতিরূপে। পূর্ববাংলার মানুষ তার সংস্কৃতির কারণেই পাকিস্তানকে মন থেকে গ্রহণ করতে পারেনি; সংস্কৃতিই পূর্ববাংলার মানুষকে ‘পাকিস্তানি’ হতে দেয়নি।
সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, সংস্কৃতি এক চলমান ও জীবন্ত বিষয়; একে কোনো সংজ্ঞায় আবদ্ধ করা যায় না। গতিময়তাই এর নান্দনিকতা। বাংলা একাডেমি বাঙালির জীবনে সংস্কৃতির সংগ্রামকেই সার্থক করে তুলেছে। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যতদিন বাংলাদেশ স্থিত থাকবে, ততোদিনই বাংলা একাডেমি তার প্রকৃতি মহিমায় উজ্জ্বল থাকবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক নূরুন্নাহার খানম।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ