বাংলা একাডেমি ২৪শে ফাল্গুন ১৪২৬/৮ই মার্চ ২০২০ রবিবার সকাল ১১:০০টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ঐতিহাসিক ভাষণের বার্ষিকী উপলক্ষ্যে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। অনুষ্ঠানে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ : মুক্তির আহ্বান শীর্ষক একক বক্তৃতা প্রদান করেন মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, এমপি। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন শাহাদাৎ হোসেন নিপু।
স্বাগত ভাষণে প্রদান করে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণ পৃথিবীর ইতিহাসে অনন্য-অসাধারণ ভাষণ। বঙ্গবন্ধু যে পরিস্থিতির মধ্যে এই ভাষণ দিয়েছেন সেটি বিবেচনায় পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ভাষণ দ্বিতীয়টি নেই। এই মহান ভাষণ কেবল মানবিক আবেদনের জন্য নয়, শৈল্পিক কারণেও উল্লেখযোগ্য। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু কেবল একটি স্বাধীন জাতির স্বপ্ন উল্লেখ করেই থেমে যাননি; তিনি সেই স্বাধীনতা অর্জনের সমস্ত উপায়ও বলে দিয়েছেন।
একক বক্তা মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, এমপি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বলতে কেবল সশস্ত্র সংগ্রামই বোঝায় না, মুক্তিযুদ্ধ মূলত জনগণের যুদ্ধ। জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া পৃথিবীর কোনো দেশেই মুক্তি সংগ্রাম সফলতা অর্জন করে না। ১৯৭১ সালের বাঙালির মুক্তিযুদ্ধও বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এর পটভূমি তৈরি হয়েছিল দীর্ঘসময় ধরে বাংলার অতিসাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে। ৫২’র ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের যে বীজ গ্রথিত হয়েছিল তার পথ ধরে পাকিস্তানি শাসকদের ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে সমগ্র জাতি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তানের অত্যাচার, অবিচারে নিষ্পেষিত বাঙালি বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের অপেক্ষাতেই ছিল। বিক্ষোভে-উত্তাপে উত্তাল মার্চে সেই চরম রাজনৈতিক সংকটময় মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে মুক্তিকামী বাঙালিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথনির্দেশনা দেন। তাঁর উদ্দীপনাময় ভাষণে জাতির চিন্তা, চেতনা ও ভবিষ্যতের স্বপ্ন প্রতিফলিত হয়েছে। এই ঐতিহাসিক ভাষণ না হলে স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতি স্বাধীনতার জন্য মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রস্তুত হতো না। বঙ্গবন্ধুর এই মহান ভাষণ স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেরণা হয়েছিল এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটা দেশ গড়ার প্রেরণা হয়ে থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ অভিঘাত সৃষ্টি করেছিল। অসাধারণ এই ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু জাতিকে স্বাধীনতার পথ নিদের্শনা দিয়েছেন। তাঁর এ ভাষণ আমরা চিরকাল স্মরণ করবো।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ