শেখ রাসেল দিবস ২০২২ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমি দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস শীর্ষক বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। আজ ১লা কার্তিক ১৪২৯/১৭ই অক্টোবর ২০২২ সোমবার সকাল ১১:০০টায় বাংলা একাডেমিতে স্থাপিত শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হয়।
সকাল ১১:৩০টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা এবং বাংলা একাডেমি প্রকাশিত শেখ রাসেলকে নিবেদিত ছোটদের ছড়া-কবিতার সংকলন দীপ্ত জয়োল্লাস-এর গ্রন্থ উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিশুসাহিত্যিক সুজন বড়ুয়া। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলা একাডেমির সচিব এ. এইচ. এম. লোকমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
অনুষ্ঠানে আরও ছিল কবিকণ্ঠে শেখ রাসেলকে নিবেদিত কবিতা-ছড়াপাঠ এবং বরেণ্য বাচিকশিল্পীদের আবৃত্তি পরিবেশনা। কবিতাপাঠে অংশ নেন কবি রুবী রহমান এবং কবি অসীম সাহা। ছড়াপাঠে অংশ নেন ছড়াশিল্পী আসলাম সানী এবং খালেক বিন জয়েনউদ্দিন। আবৃত্তি পরিবেশন করেন বাচিকশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় এবং লায়লা আফরোজ।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, রাসেল চিরশিশু, চির-সৃষ্টিশীলতার প্রতীক। ঘাতকের বুলেট তাকে অকালে পৃথিবী থেকে দূরে নিয়ে গেলেও রাসেল আছে বাংলার প্রতিটি শিশুর অন্তরে, বাংলাদেশের উজ্জীবিত স্বপ্নের ভেতরে।
মোঃ আবুল মনসুর বলেন, শেখ রাসেল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তের উত্তরাধিকার। পঁচাত্তরের ঘৃণ্য ঘাতকের দলের হাতে নির্মমভাবে শহিদ হলেও রাসেলের মতো স্বপ্নবান শিশুর কোনো মৃত্যু নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট রাসেলকে হত্যার মধ্য দিয়ে শিশুহত্যার যে নৃশংস ক্ষত বাংলাদেশে সৃষ্টি হয় তা আমাদের ইতিহাসকে করেছে কলঙ্কিত। তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশ সকল শিশুর সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে আমরা যে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছি তার নেপথ্যে রয়েছে শেখ রাসেলের প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসা।
শেখ রাসেল : নির্মলতার প্রতীক, দুরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সুজন বড়–য়া বলেন, শেখ রাসেল, যার জীবনের ব্যাপ্তি মাত্র দশ বছর। এই বয়সের একটি শিশুকে ফুলের কলির সঙ্গেই শুধু তুলনা করা চলে অথবা ভোরের সূর্যের সঙ্গে। নম্র, নবীন, নিটোল, নিষ্পাপ অবয়ব। প্রথম দেখাতেই যার ওপর চোখ থমকে যায়। শেখ রাসেল এমনই এক ঝলমলে মেধাদীপ্ত মায়ামাখা মুখ। তিনি বলেন, শেখ রাসেল চিরশিশু। তার বয়স বাড়ে না। তার বয়স দাঁড়িয়ে আছে দশ বছরে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাযজ্ঞের হিং¯্র ঘাতকদল থামিয়ে দিয়েছে শেখ রাসেলের বয়স। সামাজিক শৃঙ্খলা ও মূল্যবোধ রক্ষার দায় থেকে আমরা শেখ রাসেলের জন্মদিন পালন করি, পালন করি ভালোবাসার দায় থেকে। শেখ রাসেল আমাদের প্রগাঢ় ভালোবাসার নাম, আমাদের গভীর বেদনার নাম।
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, শেখ রাসেল একটি অসমাপ্ত স্বপ্নের নাম। রাসেলকে আমরা অকালে হারিয়েছি তবে আজ বাংলাদেশে শিশুকিশোরেরা স্বাধীনতার বীজমন্ত্রে যেভাবে সর্বক্ষেত্রে বীরদর্পে এগিয়ে চলেছে তাতে মনে হয় তাদের ভেতরেই আছে এক একজন স্বপ্নবান শেখ রাসেল।
মোহাম্মদ আকবর হোসেন
উপপরিচালক