আজ ৫ চৈত্র ১৪২৭/১৯ মার্চ ২০২১ শুক্রবার অমর একুশে বইমেলা ২০২১ দ্বিতীয় দিন। মেলা শুরু হয় সকাল ১১:০০টায়। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ৫৫টি। বিকেল ৪:০০টা বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুভাষ সিংহ রায়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আরমা দত্ত এমপি এবং নাসির উদ্দীন ইউসুফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
প্রাবন্ধিক বলেন, কোনো পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই এই ৭ই মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তবু তাঁর উচ্চারিত শব্দে কোনো দ্বিধা ও পুনরাবৃত্তি ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান প্রেরণা ছিল বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ। মুক্তিযুদ্ধের সময় তো বটেই, স্বাধীনতার পরও সেই ভাষণ আমাদের প্রাণিত ও উজ্জীবিত করে চলেছে। এ ভাষণ হলো সব ধরনের অন্যায়—অবিচারের বিরুদ্ধে বজ্রতুল্য ঘোষণা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্ব ইতিহাসে ঠাঁই করে নিয়েছে। এটা আমাদের জন্য গৌরব ও আনন্দের। বাঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ কেবল মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে আমাদের অনুপ্রেরণা হিসোব কাজ করেছে তাই নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও দিশা হয়ে আছে ও থাকবে।
আলোকচকবৃন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চ ১৯৭১-এ প্রদত্ত ১৮ মিনিটের ভাষণটি তাঁর স্বভাবসুলভ তাৎক্ষণিক বক্তব্য ছিল, পূর্বে তৈরি করা বক্তৃতা নয়। এটি মূলত রাজনীতির কবিতা। এর মহত্ত্ব ও বিরাটত্বের কারণে ২০১৭ সনের অক্টোবরে ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের অসাধারণ ভাষণটিকে পৃথিবীর অন্যতম ‘ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ভাষণটির অসাধারণত্ব, এর স্বতঃস্ফূর্ততা, নিভীর্কতা, সম্যক উপলব্ধি ও তেজস্বী উচ্চারণ প্রকৃতপক্ষে বাঙালি জনগণের প্রথমবারের মতো স্বাধীনতার চরম ও পরম আকাক্সক্ষাকে বাঙ্ময় করে তোলে। সামগ্রিক বিচারে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটি স্বাধীনতাকে সংজ্ঞায়িত করেছে, চূড়ান্তভাবে স্বাধীনতা অর্জনের দিকনির্দেশনা দিয়েছে, প্রকাশ করেছে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের রূপরেখা। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর বলিষ্ঠ প্রত্যয় আছে এ ভাষণের বাক্যগুলোর অন্তরে অন্তরে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বলিষ্ঠ ঘোষণা। এই ভাষণ মূলত বিন্দুতে সিন্ধু। মহাকাব্যিক ব্যঞ্জনার এ ভাষণের মধ্য দিয়ে বাংলার অবিসংবাদিত নেতা আসন্ন মুক্তির যুদ্ধে উপনীত জাতিকে সুসংগঠিত করেন এবং বিজয়ী প্রত্যয়ের প্রেরণা দেন। বস্তুত এ ভাষণের মধ্য দিয়ে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের সূচনা।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন রঞ্জনা বিশ্বাস, আশরাফ জুয়েল এবং মঈনুল হাসান।
আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি :
আগামীকাল ৬ চৈত্র ১৪২৭/২০ মার্চ ২০২১ শনিবার। অমর একুশে বইমেলার তৃতীয় দিন। মেলা চলবে সকাল ১১:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত।
বিকেল ৪:০০টা বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আবুল মোমেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন আবুল কাশেম এবং আবদুল মান্নান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ