১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০/২৭শে মাঘ ১৪২৬ সোমবার। অমর একুশে গ্রন্থমেলার ৯ম দিন। মেলা চলে বেলা ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। মেলায় নতুন বই এসেছে ১৭৯টি।
বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় দিব্যদ্যুতি সরকার রচিত বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া-এর উপাচার্য রাশিদ আসকারী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এডভোকেট সাহিদা বেগম ও ড. আশফাক হোসেন। লেখকের বক্তব্য প্রদান করেন দিব্যদ্যুতি সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবুল মোমেন।
প্রাবন্ধিক বলেন, গণমানুষের মুক্তি-আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে পৃথিবীতে যে ক’জন হাতে গোনা মানুষ কায়েমি শোষকদের অধীনে দীর্ঘ কারাভোগ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের মধ্যে অন্যতম। পাথরের দেয়াল এবং লোহার গরাদ অতিক্রম করে তিনি একটি স্বাধীন দেশ স্থাপন করেছেন পৃথিবীর মানচিত্রে। লেখক দিব্যদ্যুতি সরকার বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ কারাজীবনের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত বহুমাত্রিক জ্যোতির্ময় বঙ্গবন্ধুর নানাবিধ সত্তা, যেমন, মানুষ বঙ্গবন্ধু, রাজনীতিবিদ বঙ্গবন্ধু, লেখক বঙ্গবন্ধু ইত্যাদি বিষয় আবিষ্কারের প্রয়াস পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর বৈচিত্র্যময় কন্টকাকীর্ণ জীবনের এক দুর্যোগপূর্ণ অধ্যায় তাঁর কারাজীবন, সমকালীন ইতিহাসের আলোয় তার বয়ান এবং অন্তর্বয়ান আলোচ্য গ্রন্থকে মুজিব জন্মশতবর্ষের এই সময়ে খুবই প্রাসঙ্গিক।
আলোচকবৃন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর জীবনের এক তৃতীয়াংশ সময়ই কারাগারে কাটিয়েছেন। আত্মত্যাগী এই মহান নেতার আপোষহীন সংগ্রামের কারণেই বাঙালি আত্মপরিচয়ের সংকটকে কাটিয়ে বিশ্বের বুকে একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। লেখক দিব্যদ্যুতি সরকার তাঁর রচিত বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ বৈচিত্র্যময় কারাজীবনের অভিজ্ঞতাকে উপস্থাপন করেছেন। আমাদের তরুণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের ইতিহাস তুলে ধরার ক্ষেত্রে এ গ্রন্থটি তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
গ্রন্থের লেখক বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো এমন মহান ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে গ্রন্থ প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তকে ভালোভাবে যাচাই করে নেবার প্রয়োজন আছে। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ কারাজীবন নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা ও তাত্তি¡ক বিচার-বিশ্লেষণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। সংলাপনির্ভর সাধারণ ভাষায় লিখিত এ গ্রন্থের উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন সম্পর্কে নতুন কোনো তথ্য উপস্থাপন করা নয় বরং মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধুর কারাজীবনের অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরা।
সভাপতির বক্তব্যে আবুল মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ইতিহাস পর্যালোচনা করতে হলে তাঁর জেল জীবনের প্রেক্ষাপট ও অভিজ্ঞতাও আমাদের বিবেচনায় আনতে হবে। বারবার কারাবরণ ও আপোষহীন সংগ্রামের মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের উত্তরণ ঘটে এবং তিনি গণমানুষের আশা-ভরসার প্রতীকে পরিণত হন। বঙ্গবন্ধুর কারাজীবনের পটভূমিতে রচিত দিব্যদ্যুতি সরকার-এর বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন গ্রন্থটিতে জাতির পিতার জীবন ও ভাবনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে এসেছে যা এই মহান বাঙালির সামগ্রিক মূল্যায়নে ভূমিকা রাখবে।
কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি ওবায়েদ আকাশ, মতিন বৈরাগী, আলতাফ শাহ্নেওয়াজ এবং স্নিগ্ধা বাউল। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মাহিদুল ইসলাম, সুপ্রভা সেবতী, জি এম মোর্শেদ। নৃত্য পরিবেশন করেন লায়লা হাসানের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘নটরাজ’-এর নৃত্যশিল্পীবৃন্দ। সেলিম রেজার পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সংস্কৃতি মঞ্চ’-এর পরিবেশনা। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন জয় সিংহ রায় (তবলা)।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি টোকন ঠাকুর, কবি সৈয়দ তারিক, কথাশিল্পী সাগুফতা শারমীন তানিয়া এবং কবি আখতারুজ্জামান আজাদ।
আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি :
আগামীকাল ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০/২৮শে মাঘ ১৪২৬ মঙ্গলবার। অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১০ম দিন। মেলা চলবে বেলা ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত।
বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে মোহাম্মদ আলী খান রচিত ডাকটিকিট ও মুদ্রায় বঙ্গবন্ধু শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আতাউর রহমান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন শ্যামসুন্দর সিকদার ও ইকরাম আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ফজলে কবির। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ