১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০২০/১লা ফাল্গুন ১৪২৬ শুক্রবার। অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৩তম দিন। মেলা চলে সকাল ১১:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। গ্রন্থমেলায় ছিল আজ শিশুপ্রহর। আজ নতুন বই এসেছে ৩৬৯টি।
সকাল ১০:০০টায় শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক-শাখায় ১০ জন এবং খ-শাখায় ১১ জন প্রতিযোগী অংশ গ্রহণ করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আশরাফুল আলম।
বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আসাদ চৌধুরী রচিত সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শোয়াইব জিবরান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আনিসুর রহমান এবং নূরুন্নাহার মুক্তা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক খুরশীদা বেগম।
প্রাবন্ধিক বলেন, নিজস্ব একটি ভূমির অর্জন ও রক্ষার দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস পৃথিবীতে অনেক রয়েছে। কিন্তু বাঙালি জাতির নিজস্ব স্বাধীন ভূখণ্ড লাভের ইতিহাস সবচেয়ে বিস্ময়কর। বাঙালি জাতি মাত্র নয় মাস সশস্ত্র যুদ্ধ করে তাদের স্বপ্নের একটি স্বাধীন ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল। কিন্তু এ অবিশ্বাস্য অর্জনের পেছনে একজন মানুষ বিনিয়োগ করেছিলেন তাঁর সমগ্রজীবন। তিনি বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অসংখ্য সাহিত্যকর্মের সৃষ্টি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কবি আসাদ চৌধুরীর রচিত সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু গ্রন্থটি অন্যতম। এখানে অত্যন্ত শিল্পদক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ইতিহাসের একজন মহানায়কের দীর্ঘ অভিযাত্রা।
আলোচকবৃন্দ বলেন, সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু গ্রন্থটিতে কবি আসাদ চৌধুরী অত্যন্ত সচেতনভাবে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের কথা তুলে ধরেছেন। বঙ্গবন্ধুর কথা, কাজ ও সংগ্রাম সবই ছিল মানুষের জন্য নিবেদিত। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ ও জীবনদর্শন আমাদের জন্য চিরকালের আদর্শ। ‘সংগ্রাম’ শব্দটি বঙ্গবন্ধুর জীবনের সাথে এতটাই ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে, গ্রন্থের শিরোনাম আমাদের সামনে বজ্রকণ্ঠের এক মহানায়কের অবয়ব ফুটিয়ে তোলে। বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা গর্ব অনুভব করতে পারি যে আমরা এ স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মেছি এবং বঙ্গবন্ধুর মতো মহান নেতাকে আমাদের আদর্শ হিসেবে পেয়েছি।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক খুরশীদা বেগম বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতা মানবমুক্তির সংগ্রামে কীভাবে নিজেকে উৎসর্গ করতে পারে বঙ্গবন্ধু তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি ছিলেন একজন সহজাত রাজনীতিক। পৃথিবীতে মানুষের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন নেতা বিরল যাঁর ডাকে দুঃখ-দারিদ্র্যপীড়িত একটি দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠী যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় লিখিত সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধুর গ্রন্থটি তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন ফরিদ কবির, মাহবুব আজীজ, আফরোজা সোমা এবং চৌধুরী শহীদ কাদের।
কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, সাজ্জাদ আরেফিন, তারিক সুজাত এবং সুহিতা সুলতানা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আহ্কাম উল্লাহ, সায়েরা হাবীব এবং নাজনীন নাজ। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম, তানভীর সজীব আলম, তানজিনা করিম স্বরলিপি, মুর্শিদ আনোয়ার, রাজিয়া সুলতানা এবং শরণ বড়ুয়া। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ পাল (তবলা), সাহেদ সরকার বাপ্পী (প্যাড), সুমন রেজা খান (কী-বোর্ড), শাহরাজ চৌধুরী (গীটার)।
আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি:
আগামীকাল ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০/২রা ফাল্গুন ১৪২৬ শনিবার। অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৪তম দিন। মেলা চলবে সকাল ১১:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। সকাল ১১:০০টা থেকে বেলা ১:০০টা পর্যন্ত মেলায় থাকবে শিশুপ্রহর।
সকাল ১০:০০টায় শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে শাহ্জাহান কিবরিয়া রচিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আনজীর লিটন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন হরিশংকর জলদাস এবং খালিদ মারুফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ