আজ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/৩০ মাঘ ১৪২৫ অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১২তম দিন। মেলা চলে বেলা ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৪৯টি।
বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় কবি-অনুবাদক মনিরউদ্দীন ইউসুফ : জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাসান হাফিজ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শফিউল আলম, রেজাউদ্দিন স্টালিন এবং মোহাম্মদ আবদুল হাই। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ।
প্রাবন্ধিক বলেন, মনস্বী, বহুমাত্রিক একজন লেখক ছিলেন মনিরউদ্দীন ইউসুফ। সাধারণ কোনো লেখক নন, সাধকই বলতে পারি তাঁকে। আমৃত্যু ব্রতী ছিলেন জ্ঞান ও সাহিত্য সাধনায়। সুদীর্ঘ সাহিত্যজীবনে তিনি সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় সৃজনকর্মে গভীর অভিনিবেশ, নিষ্ঠা ও মৌলিকত্বের পরিচয় রেখে গেছেন। যে মেধা, ঐকান্তিক অধ্যবসায়ে তাঁর সাহিত্যকৃতি উজ্জ্বল এবং বিচিত্রগামী হয়েছে, আমরা পেয়েছি সোনালি ফসল। প্রকৃতার্থেই তিনি ছিলেন সব্যসাচী একজন লেখক। অঙ্গীকার, প্রত্যয়, একাগ্রতা, শ্রম দিয়ে তিনি আমাদের সাহিত্য অঙ্গনকে ঋদ্ধ করে গেছেন। বিশ্ববিশ্রুত একাধিক লেখকের শাশ্বত কালজয়ী রচনার সঙ্গে তিনি আমাদের প্রত্যক্ষ পরিচয় ঘটিয়ে দিয়েছেন। তাঁর মেধাবী অনুবাদে আমরা সেগুলোর মূল্যবান আস্বাদ লাভ সমর্থ হয়েছি। বর্তমানকালে আমাদের দেশে তাঁর মতো এরকম নিবেদিতপ্রাণ, অনুকরণীয় সাহিত্য ব্যক্তিত্বের বড্ড অভাব।
আলোচকবৃন্দ বলেন, শাহনামা অনুবাদ মনিরউদ্দীন ইউসুফের অসামান্য কীর্তি। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বসাহিত্যের ধ্রুপদী সৃজনকর্মের সঙ্গে তিনি বাঙালি মননের যোগাযোগ স্থাপন করেছেন। শুধু এই অনুবাদ নয়, তাঁর কবিতা, প্রবন্ধ এবং অন্যান্য রচনায় একজন সংবেদী মানুষের পরিচয় মুদ্রিত রয়েছে যাকে অনায়াসে শুভ ও কল্যাণ-চেতনার প্রতীক বলে আখ্যায়িত করা যায়।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ বলেন, মনিরউদ্দীন ইউসুফ একজন বিস্মৃত মনীষা। বাংলা একাডেমি তাঁর অনুবাদে ছয় খ-ে শাহনামা প্রকাশ করছে যা দেশে ও বিদেশে বিপুলভাবে আদৃত হয়েছে। জন্মশতবর্ষে তাঁকে নিয়ে এ স্মরণ-আয়োজন মূলত তাঁর অসামান্য কৃতির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার নিদর্শন।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন আখতারুজ্জামান আজাদ, মোহিত কামাল, বেগম আকতার কামাল, হামিম কামাল এবং নাসরিন সিমি।
কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি জাহিদুল হক এবং জাহিদ হায়দার। আবৃত্তি পরিবেশন করেন নাজমুল আহসান এবং জিনিয়া ফেরদৌস। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী কল্যাণী ঘোষ, বিশ্বজিৎ রায়, ফারহানা ফেরদৌসী তানিয়া, সানজিদা মাহমুদ নন্দিতা, রাজিয়া সুলতানা, নাজমুল আহসান তুহিন, উম্মে রুমা ট্রফি এবং সঞ্জয় কুমার দাস। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন গৌতম মজুমদার (তবলা), ইফতেখার হোসেন সোহেল (কী-বোর্ড), রিচার্ড কিশোর (গীটার) এবং বিশ্বজিৎ সেন (মন্দিরা)।
আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি :
আগামীকাল ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/১লা ফাল্গুন ১৪২৫। মেলা চলবে বেলা ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত।
বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে কবি রফিক আজাদ : শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিশ্বজিৎ ঘোষ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন অসীম সাহা, ফারুক মাহমুদ এবং জাফর আহমদ রাশেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন রশীদ হায়দার। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ