আজ ৮ই চৈত্র ১৪২৮/২২শে মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস স্মরণে একক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি, পত্রিকা ও মিলনায়তন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) নূরুন্নাহার খানম। বক্তৃতা প্রদান করেন লেখক, গবেষক ড. নূহ-উল-আলম লেনিন। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। শুরুতে ২৫শে মার্চ কালরাতের শহিদ স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
স্বাগত বক্তব্যে নূরুন্নাহার খানম বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার কালরাত পেরিয়ে বাংলাদেশ একাত্তরে জেগে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের মহা-ভোরের মোহনায়। এই জাগরণকে আজ জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সত্য ও সার্থক করে তুলতে হবে।
একক বক্তা ড. নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, স্বাধীনতার ঊষালগ্নে নৃশংস ও নির্মম হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে পাক হানাদার বাহিনী বাংলার আত্মাকে বিধ্বস্ত ও বিনষ্ট করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এ অঞ্চলের উদার—অসাম্প্রদায়িকমা-নবতাবাদী মানুষ তাদের স্বাধীনতার অদম্য আকাঙ্ক্ষাকে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ নেতৃত্ব-নৈপুণ্যে বাস্তবে রূপ দিয়ে পাকবাহিনীর বর্বরতার জবাব দিয়েছে। তিনি বলেন, পাকিস্তানি বাহিনী নাৎসিদের মতোই অন্ধ বর্বরতায় বাঙালি জাতিকে নির্মূল করতে চেয়েছে। তারা এক্ষেত্রে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে পবিত্র ধর্মকে। একাত্তরের ২৫শে মার্চ থেকে ১৪ই ডিসেম্বর পর্যন্ত চলেছে ধারাবাহিক গণহত্যা। শুধু ঢাকার সামরিক এবং বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু নয়, মূলত সারা বাংলাদেশকেই তারা গণহত্যার ক্ষেত্রে পরিণত করেছিল। একক বক্তা বলেন, গণহত্যা দিবসে আমাদের শপথ হোকÑ পৃথিবীতে যে কোনো গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ববিবেককে জাগ্রত করা।
সভাপতির বক্তব্যে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, গণহত্যা মানেই দখলদারিত্ব, আধিপত্যকামিতা, ক্ষমতালিপ্সা। অন্যের অস্তিত্বকে লঘু এবং মূল্যহীন করতে আত্ম—অস্তিত্বকে চাপিয়ে দেওয়া, বিরুদ্ধবাদীদের বিনাশ করা। একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী ঠিক এমনই যুক্তিহীন বর্বরের শাসন কায়েম করে নির্বিচারে বাঙালি হত্যায় মেতেছিল। তবে কোনো গণহত্যাকারীই শেষ বিচারে সফল হয় না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গণহত্যার বিরুদ্ধে বাঙালি বাংলাদেশ—রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে গণজয় সম্ভব করেছে। তিনি বলেন, ২০১৭ সাল থেকে ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস জাতীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। এখন এই দিবস আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হওয়া দরকার; যেন পৃথিবীর কোনো প্রান্তে আর কোনো গণহত্যা সংঘটিত না হয়।
মোহাম্মদ আকবর হোসেন
উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব)