বাংলা একাডেমি আজ ১৭ই কার্তিক ১৪২৯/২রা নভেম্বর ২০২২ বুধবার সকাল ১১:০০টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে ভাষাসংগ্রামী ও শহিদ বুদ্ধিজীবী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের ১৩৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বিস্ময়কর অবদান শীর্ষক বক্তৃতা প্রদান করেন কবি ও প্রবন্ধকার অধ্যাপক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোচনা করেন শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পৌত্রী, জাতীয় সংসদ সদস্য আরমা দত্ত। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলা একাডেমির সচিব এ. এইচ. এম. লোকমান।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদার কথা প্রথম উত্থাপন করে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা আন্দোলনের বীজ বপন করেন। সেই ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা।
প্রবন্ধ উপস্থাপন অধ্যাপক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলা ভাষার জন্য, বাংলাদেশের জন্য আমৃত্যু লড়াই করে গেছেন, জীবন দিয়েছেন। বৈরী পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতির জন্য তাঁর কণ্ঠ সোচ্চার করেছেন। তিনি তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রীয় আচরণ ও মনোভঙ্গির মধ্যেও তিনি তাঁর মাতৃভূমি ত্যাগ করে কোথাও যাননি। বরং অসাম্প্রদায়িক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। শত্রæপক্ষ তাঁর এই লড়াইয়ের ফলেই হয়তো ১৯৭১ সালে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করার পথ বেছে নেয়। তিনি বলেন, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্মরণ করুক বা নাই করুক, বাংলাদেশের আত্মা থেকে তাঁকে কখনই বিচ্ছিন্ন বা বিযুক্ত করা যাবে না।
আরমা দত্ত এমপি বলেন, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত দেশের জন্য, ভাষার জন্য লড়াই করেছেন এবং সেই দেশের মাটিতেই তাঁকে রক্তাক্ত পরিণতি বহন করতে হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে যথাযথভাবে স্মরণ করা আমাদের কর্তব্য হলেও আমরা এ ক্ষেত্রে উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছি। তিনি বলেন, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের স্মৃতি রক্ষার্থে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তাঁর নামে একটি চত্বর ও তাঁর আবক্ষ ভাস্কর্য নির্মাণ করা জরুরি।
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত আমাদের জাতিসত্তার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে মিশে আছেন। তিনি শুধু বীর ভাষাসংগ্রামীই নন, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদও বটে। তাঁকে স্মরণ করা মানেই বাংলাদেশের রক্তাক্ত অভ্যুদয় ও অমর চেতনাকে স্মরণ করা।
মোহাম্মদ আকবর হোসেন
উপপরিচালক