বিকেল ৪:০০টা গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় নূহ-উল-আলম লেনিন রচিত রাজনীতিতে হাতেখড়ি ও কলকাতায় শেখ মুজিব শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক মোহীত উল আলম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আসাদ মান্নান এবং সাহেদ মন্তাজ। লেখকের বক্তব্য প্রদান করেন নূহ-উল-আলম লেনিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ হাসান ইমাম।
প্রাবন্ধিক বলেন, আলোচ্য বইয়ে লেখক অনেকটা নির্মোহ থেকে কীভাবে শেখ মুজিব টুঙ্গিপাড়া জন্মস্থান থেকে বাংলাদেশের জাতির পিতা হিসেবে আবিভর্‚ত হলেন তার একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু প্রণিধানযোগ্য রাজনৈতিক আলেখ্য তৈরি করেছেন। শেখ মুজিব তাঁর যৌবনদৃপ্ত সময়ে পাকিস্তান-আন্দোলনের একজন একনিষ্ঠ রাজনৈতিক কর্মী ও নেতা ছিলেন। কিন্তু পাকিস্তান হবার সাথে সাথেই তিনি হৃদয়ঙ্গম করেন যে নতুন দেশটি দিয়ে বাঙালির স্বপ্ন পূরণ হবে না। নূহ-উল-আলম লেনিনের গ্রন্থটির মূল অনুসন্ধান এ জায়গায় যে কখন থেকে বঙ্গবন্ধুর মানসে দ্বিজাতিতত্তে¡র ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের আবরণে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক পাকিস্তান থেকে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের কাঠামোয় সৃষ্ট অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ধারণা জন্ম নিল।
আলোচকবৃন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত অত্যন্ত চমৎকারভাবে বিধৃত হয়েছে নূহ-উল-আলম লেনিন রচিত এ গ্রন্থে। রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই বাঙালি এবং বাংলাদেশ ছিল বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও মননে। কলকাতায় রাজনীতির অভিজ্ঞতা তাঁর পরবর্তী রাজনৈতিক জীবনের অভিঘাত হিসেবে কাজ করেছে এবং তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ ও চেতনাকে শাণিত করেছে। কাজেই বলা যায় বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে হাতেখড়ি মূলত বাঙালির বহু আকাক্সিক্ষত স্বাধীনতা অর্জনের পথে অভিযাত্রার সূত্রপাত।
গ্রন্থের লেখক নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, বর্তমান গ্রন্থের পরিসরে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে হাতেখড়ি ও কলকাতার জীবনচর্যার দিকগুলোই আলোচিত হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর পরবর্তী পরিণত রাজনৈতিক জীবনের কিছুটা আভাস এখানে উঠে এসেছে। তবে বঙ্গবন্ধুর মতো একজন মহান দেশপ্রেমিক ও রাজনীতিবিদকে সামগ্রিকভাবে দেখতে হলে তাঁর সমগ্র রাজনৈতিক জীবনকেই বিচার-বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, বাংলার মানুষের ভালোবাসা ও বাংলার মাটির কোমলতাই বঙ্গবন্ধুকে ‘বঙ্গবন্ধু’ হিসেবে নির্মাণ করেছিল এবং তাঁর ভেতর অসাধারণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞার উন্মেষ ঘটিয়েছিল। মানুষের মনন ও চেতনাকে স্পষ্টরূপে বুঝতে পেরেছিলেন বলেই তিনি বাঙালির জাতির মহান রাজনৈতিক নেতায় পরিণত হতে পেরেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের উত্থানকে বুঝতে নূহ-উল-আলম লেনিন রচতি রাজনীতিতে হাতেখড়ি ও কলকাতায় শেখ মুজিব গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি ইকবাল আজিজ, কবি ঝর্ণা রহমান, কবি ফারুক মাহমুদ, ও কবি মারুফ রায়হান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রেজিনা ওয়ালী, মীর বরকত এবং নাজমুল আহসান। সংগীত পরিবেশন করেন চন্দনা মজুমদার, কোহিনুর আক্তার গোলাপী, লতিফ শাহ, রুশিয়া খানম ও রাকিবুল ইসলাম রাকিব। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন দীপক কুমার দাস (তবলা), রতন কুমার রায় (দোতারা), আবদুস সোবহান (বাংলা ঢোল) এবং সুমন রেজা খান (কী-বোর্ড)।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন জসিম মল্লিক, অনন্ত উজ্জ্বল, হানযালা হান এবং মন্দিরা এষ।
আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি :
আগামীকাল ৭ই ফেব্রæয়ারি ২০২০/২৪শে মাঘ ১৪২৬ শুক্রবার। অমর একুশে গ্রন্থমেলার ষষ্ঠ দিন। মেলা চলবে সকাল ১১:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত।
শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা : সকাল ৮:৩০টায় অমর একুশে উদ্যাপনের অংশ হিসেবে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করবেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী।
শিশুপ্রহর ঘোষণা : আগামীকাল সকাল ১১:০০টা থেকে বেলা ১:০০টা পর্যন্ত গ্রন্থমেলায় শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়েছে।
বিকেল ৪:০০টা গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে সৈয়দ শামসুল হক রচিত বঙ্গবন্ধুর বীরগাথা এবং এর অনুবাদ ইধষষধফ ড়ভ ড়ঁৎ ঐবৎড় : ইধহমধনধহফযঁ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন খায়রুল আলম সবুজ এবং আনিসুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী।
সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ