লেখক শেখ হাসিনা শীর্ষক আলোচনা সভা ও গ্রন্থ-প্রদর্শনী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উদ্যাপন উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমি আজ ১৩ই আশ্বিন ১৪২৭/২৮শে সেপ্টেম্বর ২০২০ সোমবার সকাল ১১:০০টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে লেখক শেখ হাসিনা শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে।
সকাল ১০:৩০টায় বাংলা একাডেমিতে ২৮.০৯.২০২০ থেকে ৩০.০৯.২০২০ (সোমবার-বুধবার) শেখ হাসিনা রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের ০৩ দিনব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ এমপি। প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১০:০০টা থেকে বিকেল ৪:০০টা পর্যন্ত চলবে।
‘লেখক শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ এমপি। বক্তৃতা প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। শেখ হাসিনাকে নিবেদন করে লেখা নির্মলেন্দু গুণের ‘পথে পাথে পাথর’ কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী আহ্কামউল্লাহ। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানের শুরুতে সদ্যপ্রয়াত এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের প্রয়াণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক-লেখক আবেদ খান, কবি তারিক সুজাত, লেখক নূরুল করিম নাসিম প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্যে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, শেখ হাসিনা রচিত গদ্যে স্মৃতির দখিন দুয়ার খোলা থাকে সতত; তিনি সে দুয়ার খুলে দেখেন ফেলে আসা সময়, জনমানুষ ও জীবন। অন্যদিকে স্বদেশ, সমাজ এবং বিশ্বপরিস্থিতি নিয়ে গভীর ভাবনার পাশাপাশি ভাগ্যবঞ্চিত বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের রূপকল্পনায়ও উদ্ভাসিত তাঁর প্রবন্ধপট। ওরা টোকাই কেন থেকে শেখ মুজিব আমার পিতা- বইগুলোর নিবিড় পাঠে আমরা এ সত্যের সন্ধান পাই।
শেখ হাসিনা রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থপাঠ কেন অপরিহার্য শীর্ষক বক্তৃতা প্রদান করে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, একদিকে স্বজন হারানো বুকে কষ্টের পাথর চেপে; পিতা মুজিবের মতোই অন্ধকার সময়ের সকল জটিলতা-কুটিল ষড়যন্ত্র, ভয়-ভীতি, প্রলোভন ও প্রতিনিয়ত মৃত্যুবাণ উপেক্ষা করে, দেশের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন ও ভালোবাসা অভিষিক্ত হয়ে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের পথে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন; অন্যদিকে বেদনামথিত হৃদয়ে দেশে-বিদেশে, কারা অভ্যন্তরে এমনকি রাষ্ট্র পরিচালনার সীমাহীন ব্যস্ততা উজিয়ে চলমান রেখেছেন তাঁর লেখনি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা রচিত গ্রন্থসমূহে সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় বর্ণিত ঘটনাসমূহের তীব্র-তীক্ষè পর্যবেক্ষণ যেমন আমাদের নতুন পথের সন্ধান দেয়; তেমনি মুজিববর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শতবর্ষ স্মারকগ্রন্থসহ তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থ ও গোয়েন্দা দলিলপত্র উত্তর প্রজন্মের জন্যে বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমাজবাস্তবতার গতিপথ অনুধাবনে সচেতন ও সতর্ক হতে সহায়তা করে। তাই, শেখ হাসিনা রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থসমূহ পাঠ করা আমাদের জন্যে অপরিহার্য।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কে এম খালিদ এমপি বলেন, রাজীনিতিবিদ ও রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যতটা আলোচিত হয়েছেন লেখক শেখ হাসিনাও ঠিক ততটা আলোচনা পাওয়ার দাবিদার। আমরা মনে করি তাঁর সংগ্রামী জীবন ও রাজনীতি যেমন গবেষণার বিষয় তেমনি তাঁর লেখকসত্তাও গভীর গবেষণার দাবি রাখে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার রচনায় জীবনের বৈচিত্র্যের পাশাপাশি উৎসারিত হয়েছে গভীর বেদনাবোধ। আমরা সবাই জানি কী তাঁর বেদনা; কী তাঁর শোক। বঙ্গবন্ধুসহ পুরো পরিবারকে হারিয়ে যিনি সমগ্র দেশবাসীকে বরণ করে নিয়েছেন আপন পরিবার হিসেবে; তাঁর পক্ষেই সম্ভব অসাধারণ ও অতুলনীয় ত্যাগ, শ্রম, মেধা ও দক্ষতায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকে এভাবে অব্যাহত এগিয়ে নেয়া।
সভাপতির অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রনায়ক ও বিশ্বনেতা শেখ হাসিনা লেখক হিসেবেও বিশিষ্টতার দাবিদার। এ পর্যন্ত প্রকাশিত তাঁর গ্রন্থসমূহ ধারণ করেছে নিজের ঘটনাবহুল জীবনের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের অজানা কথা, দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি প্রগাঢ় ভালবাসা, সর্বোপরি একজন অসাম্প্রদায়িক-প্রগতিশীল মানুষের স্বপ্ন ও সংকল্প। শেখ হাসিনার রচনা-কুশলতা, ভাষাভঙ্গি, গদ্যশৈলী প্রমাণ করে লেখক হিসেবেও তিনি অনন্য ও স্বতন্ত্র।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ড. মোঃ শাহাদাৎ হোসেন।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ