আজ ২৩ই ফাল্গুন ১৪২৮/৮ই মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলার ২২তম দিন। মেলা চলে বিকেল ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। আজ নতুন বই এসেছে ৭৭টি।
আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান : বিকাল ৪:০০টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সংগীত ও কবিতায় একুশের চেতনা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইম রানা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফেরদৌস হোসেন ভূঁইয়া, এ এফ এম হায়াতুল্লাহ এবং মুস্তাফিজ শফি। সভাপতিত্ব করেন নিরঞ্জন অধিকারী।
প্রাবন্ধিক বলেন, একুশ বাঙালির জীবনে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক অধিকারের সচেতনতা এবং প্রতিবাদের দৃঢ়তা নিয়ে এসেছিল। পৃথিবীতে প্রতিনিয়তই রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে মর্যাদার লড়াই লেগে আছে। কিন্তু ভাষা আন্দোলন কেন ইতিহাসে এতটা প্রভাব নিয়ে বাঙালি জাতির স্মরণোৎসবে পরিণত হলো—এর পেছনে প্রধান কারণ সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ। তাই একুশের প্রতিরোধী চেতনা—সমৃদ্ধ অজ¯্র বাংলা কবিতা ও সংগীত পৃথিবীর যে কোনো জাতি বা রাষ্ট্রে বিরল একটি উদাহরণ। স্বাধীনতা—পূর্বকালে বাঙালির গৌরব, ত্যাগ ও সাহসিকতার একমাত্র বিষয় ছিল একুশের চেতনা। তাই প্রথিতযশা কবি, শিল্পী ও গায়কের কবিতা ও সংগীতে প্রাসঙ্গিকভাবেই অমর একুশে এবং ভাষাশহিদদের বীরত্বগাথা স্থান করে নিয়েছে।
আলোচকবৃন্দ বলেন, একুশের গান ও সংগীতে যেমন শোক আছে, তেমনি আছে প্রতিবাদ। বাঙালির সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির আকাক্সক্ষা ধ্বনিত হয়েছে এসব কবিতা ও গানে। শুধু সংগীতে ও কবিতায় নয়, একুশের চেতনা সমগ্র সমাজে বিস্তৃত করতে হবে। একুশের চেতনাকে ধারণ করে শোষণ—পীড়নহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নিরঞ্জন অধিকারী বলেন, বাঙালির রাজনৈতিক ও সামাজিক অগ্রযাত্রায় একুশের চেতনা পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। একুশের চেতনাই আমাদের স্বাধীনতার অঙ্কুর, যা বিকশিত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। একুশ নিয়ে রচিত কবিতা ও গান সংকলন ও সংরক্ষণের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন নাসিমা আনিস এবং জাহানারা পারভীন।
আজকের অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি শাহ কামাল সবুজ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রোকসানা পারভীন স্মৃতি এবং ঝর্ণা আলমগীর। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল মোঃ ফয়েজুল বারীর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সুরতাল সংগীত একাডেমী’—এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সুভাষ বিশ্বাস, মো. নূরুল ইসলাম, মো. মনছুর আহাম্মদ, বাউল জাহাঙ্গীর, অণিমা মুক্তি গোমেজ, রহিমা খাতুন, মীর তারিকুল ইসলাম, সানজিদা ইয়াসমিন লাভলী এবং লাভলী শেখ। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বাবু জামান (তবলা), নির্মল কুমার দাস (দোতারা), এফ. এম. আলমগীর কবীর (বাঁশি) এবং ডালিম কুমার বড়–য়া (কী—বোর্ড)।
আগামীকালের অনুষ্ঠান
আগামীকাল ২৪শে ফাল্গুন ১৪২৮/৯ই মার্চ ২০২২ বুধবার অমর একুশে বইমেলার ২৩তম দিন। মেলা চলবে বিকেল ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত।
আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান : বিকাল ৪:০০টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সরকার আবদুল মান্নান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন কেরামত মওলা, গোলাম কুদ্দুছ এবং সৌম্য সালেক। সভাপতিত্ব করবেন কবি কামাল চৌধুরী।
সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মোহাম্মদ আকবর হোসেন
উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব)