জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমি বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। আজ ১২ই ভাদ্র ১৪২৬/২৭শে আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার সকাল ৭:০০টায় একাডেমির পক্ষ থেকে জাতীয় কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বিকেল ৪:০০টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন বাংলা একাডেমির সচিব এবং ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। নজরুলের বিদ্রোহ : রাজনীতি, অর্থনীতি ও ধর্মে শীর্ষক বক্তৃতা প্রদান করেন অধ্যাপক মোহীত উল আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
স্বাগত ভাষণে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। সাহিত্যের সব শাখায় তাঁর ছিল সচ্ছন্দ বিচরণ। তাঁর জীবন ও কর্মে বিদ্রোহ ছিল, তিনি কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি। তাঁর দর্শনকে আমাদের জীবনে আদর্শ করে তুলতে পারলে আমাদের অনেক জাতীয় সংকট কেটে যাবে।
একক বক্তা অধ্যাপক মোহীত উল আলম বলেন, নজরুল গানের মধ্য দিয়ে সমাজ থেকে বৈষম্য দূর করে সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধু তাকে রাজনৈতিক রূপ দিলেন। এখানে ব্যক্তি মানুষের উদ্বোধন কবি নজরুল করে গেছেন; বঙ্গবন্ধু একটি স্বাধীন জাতি রাষ্ট্রের জন্ম দিলেন। এভাবে আমরা আমাদের জাতির পিতা ও জাতীয় কবিকে মেলাতে পারি। তিনি বলেন, আমরা প্রকৃত নজরুলকে চর্চা করতে পারিনি। আমরা যে নজরুলকে চর্চা করি, তা আমাদের তৈরি। প্রকৃত নজরুল মনে-প্রাণে অসাম্প্রদায়িক ছিলেন, কুসংস্কার তাঁর ভিতর ছিল না, শ্রেণিবৈষম্য ঘুচিয়ে ফেলার কথা তিনি বলেছেন। তাঁর মতো উদার চিন্তার মানুষ আমরা হতে পারিনি।
সভাপতির ভাষণে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম বিদ্রোহী পরিচয় পেয়েছেন কেবল ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লেখার জন্য নয়, তিনি ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ধর্মীয় গোঁড়ামির বিপক্ষে, সকল ধরনের বৈষম্য অত্যাচার অনাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন। নজরুলের বিদ্রোহ ব্যাপক ও তাৎপর্যপূর্ণ।
সাংস্কৃতিক পর্বে নজরুলের কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিক শিল্পী আশরাফুল আলম এবং নজরুলগীতি পরিবেশন করেন তানভীর আলম সজীব।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ