আজ ১১ই ফাল্গুন ১৪২৮/২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার। অমর একুশে বইমেলার ১০তম দিন। মেলা চলে দুপুর ২:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। বইমেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১০৬টি।
বিকাল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সংবিধান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফউজুল আজিম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সাহিদা বেগম এবং কুতুব আজাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক খুরশীদা বেগম।
প্রাবন্ধিক বলেন, বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের লক্ষ্য ছিল এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। কিশোর বয়সে একটি সেবা সংগঠনের মাধ্যমে দেশসেবার যে ব্রতের সাথে তিনি যুক্ত হয়েছিলেন, আন্দোলন, সংগ্রাম, জেল—জুলুম, দাঙ্গা, প্রকৃতিক দুযোর্গ ইত্যাদি নানা রকম সংকটপূর্ণ জীবন অতিক্রম করে যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন তার সফল প্রতিফলন ঘটেছে ১৯৭২ সালে গৃহীত ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’—এর সংবিধানে। দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন সংবিধানের রূপকার অ্যালবি স্যাক্স সংবিধানকে একটি জাতির আত্মজীবনী হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাঁর এই কথাটি বাংলাদেশের সংবিধানের ক্ষেত্রে শতভাগ প্রযোজ্য। নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সংবিধান বাঙালি জাতির আত্মজীবনী আর সেই আত্মজীবনীর রূপকার আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান কোনো আকস্মিক বিষয় নয়। মুক্তিকামী বাঙালির দীর্ঘ আন্দোলন—সংগ্রামের অনিবার্য ফসল বাংলাদেশের সংবিধান, যেখানে বাংলার গণমানুষের স্বপ্ন বাস্তব রূপ লাভ করেছে। বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন বাংলার জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, ধর্মনিরপেক্ষতা, বাক স্বাধীনতা ও নারী—পুরুষের সমতা নিশ্চিতের মতো বিষয়গুলো প্রতিফলিত হয়েছে আমাদের সংবিধানে।
সভাপতির বক্তব্যে খুরশীদা বেগম বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ এবং একটি অনন্য সংবিধান। আমাদের সংবিধানে যে মূল দর্শনগুলো উঠে এসেছে সেগুলোই আমাদের পথনির্দেশনা। এই দর্শনকে অনুসরণ করেই আমাদের প্রগতির পথে অগ্রসর হতে হবে।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন রাশেদ রউফ এবং মজিদ মাহমুদ।
আজকের অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মাহবুব সাদিক, নুরুন্নাহার শিরীন এবং চঞ্চল শাহরিয়ার। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ফয়জুল আলম পাপ্পু, মীর মাসরুর জামান রনি এবং সুপ্রভা সেবতি। সাংস্কৃতিক পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘মৈত্রী শিশুদল’—এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা, সালাউদ্দিন আহমেদ, এম এম উম্মে রুমা ট্রফি, মো. মেজবাহ রানা এবং এ কে এম শহীদ কবীর পলাশ। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন রাজু চৌধুরী (তবলা), ডালিম কুমার বড়–য়া (কী—বোর্ড), রিচার্ড কিশোর (গীটার), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি)।
ভাষাশহিদ মুক্তমঞ্চের অনুষ্ঠান
বিকেল ৩:০০টায় এই মঞ্চে শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ। স্বরচিত কবিতাপাঠে অংশ নেন ২৫জন কবি। বিকেল ৪:০০টায় প্রদর্শিত হয় নাসির উদ্দিন ইউসুফ পরিচালিত চলচ্চিত্র গেরিলা।
আগামীকালের অনুষ্ঠান
আগামীকাল ১২ই ফাল্গুন ১৪২৮/২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার অমর একুশে বইমেলার ১১তম দিন। মেলা চলবে সকাল ১১:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত।
বইমেলায় শিশুপ্রহর : আগামীকাল মেলায় থাকছে শিশুপ্রহর। সকাল ১১:০০টা থেকে বেলা ১:০০টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়েছে।
আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান : বিকাল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ এবং বিদ্রোহী কবিতা ও ৭ই মার্চের ভাষণ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন যথাক্রমে সৌমিত্র শেখর এবং রাশিদ আসকারী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন অনিরুদ্ধ কাহালী, শিহাব শাহরিয়ার এবং তপন বাগচী। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা।
সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মোহাম্মদ আকবর হোসেন
উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব)