২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০/১৪ ফাল্গুন ১৪২৬ বৃহস্পতিবার। অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২৬-তম দিন। গ্রন্থমেলা চলে বেলা ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। আজ নতুন বই এসেছে ১৫৫টি।
বিকাল ৪:০০টায় অনুষ্ঠিত হয় শামসুজ্জামান খান সম্পাদিত বঙ্গবন্ধু নানা বর্ণে নানা রেখায় শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আহমাদ মাযহার। আলোচনায় অংশ নেন সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, এনামুল করিম নির্ঝর এবং আমীরুল ইসলাম। বক্তব্য প্রদান করেন গ্রন্থের সম্পাদক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন মাহফুজা খানম।
প্রাবন্ধিক বলেন, বঙ্গবন্ধু নানা বর্ণে নানা রেখায় বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বিচিত্র রচনার একটি সংকলন। সম্পাদকের ভাষায় ‘দুই পর্বে সাতটি অধ্যায়ে বিন্যস্ত একটি সুপরিকল্পিত সংকলন’। বেশিরভাগ রচনার রীতি অনুসরণ করলে ক্রমশ টের পাওয়া যায় যে কিশোর পাঠকদের উদ্দেশ্য করেই বইটি রচিত। প্রথম পর্বে রয়েছে ‘জীবনকথা ও মূল্যায়ন’। বইটির দ্বিতীয় পর্বের প্রথম অধ্যায়ে সংকলিত হয়েছে ছড়া-কবিতা ও গান। পরের অধ্যায়ে রয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কয়েকটি গল্প। গল্পগুলোর কোনো কোনোটায় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ একাকার হয়ে গেছে।
আলোচকবৃন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধু নানা বর্ণে নানা রেখায় গ্রন্থটি অত্যন্ত সুশোভিত, সুগ্রন্থিত এবং সুসম্পাদিত। গ্রন্থটির অবয়ব ও সংকলিত লেখাগুলো থেকে একে কিশোর পাঠকদের জন্য রচিত মনে হওয়াই স্বাভাবিক। গ্রন্থের প্রতিটি লেখাই তাৎপর্যপূর্ণ কেননা দেশের বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক ও গবেষকগণ তাদের লেখায় বঙ্গবন্ধুকে নানা মাত্রায় এখানে উপস্থাপন করেছেন। স্কুল, কলেজ, গ্রন্থাগার এবং সরকারি- বেসরকারি শিশু সংগঠনগুলোর মাধ্যমে গ্রন্থটি শিশু-কিশোর তথা পাঠকদের হাতে পৌঁছে দিতে পারলে বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তাদের জানার পরিধি বৃদ্ধি পাবে।
গ্রন্থের সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রকাশ ঘটেছে বঙ্গবন্ধু নানা বর্ণে নানা রেখায় বইয়ে।
সভাপতির বক্তব্যে মাহফুজা খানম বলেন, কেবল কিশোর পাঠক নয়, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক স্মৃতিচারণ, ছড়া, কবিতা, গল্প ও জীবনপঞ্জি সংবলিত এ গ্রন্থটি সকল বয়সের পাঠকদের কাছে সমাদৃত হবে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশের সময় আমাদের বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে তাঁকে আমরা যথার্থ উচ্চতায় উপস্থাপন করছি কিনা। এ ধরনের গ্রন্থ প্রকাশের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের ক্ষণটিকে সার্বজনীনভাবে উদযাপনের জন্য আমাদের নানামুখী উদ্যোগ নেয়া উচিত।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন রফিকুর রশীদ, সালমা বাণী, মতিন্দ্র মানখিন এবং নওশাদ জামিল।
কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি রবীন্দ্র গোপ, বদরুল হায়দার, তপন বাগচী এবং খালেদ উদ্-দীন। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী সামিউল ইসলাম পোলক এবং সংগীতা চৌধুরী। পুথিপাঠ করেন জালাল খান ইউসুফী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল মিলন কান্তি দে’র রচনা ও নির্দেশনায় এবং দেশ অপেরা’র পরিচালনায় যাত্রাপালা ‘রক্তে রাঙানো বর্ণমালা’।
গ্রন্থমেলায় হুমায়ুন আজাদকে স্মরণ
বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদের উপর মৌলবাদী চক্রের সন্ত্রাসী হামলার বার্ষিকীতে একুশে গ্রন্থমেলায় আজ বিকেলে তাঁকে স্মরণ করা হয়। লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের যৌথ উদ্যোগে বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসের তথ্যকেন্দ্রের সামনে আয়োজিত এ সভার শুরুতে তাঁর স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। বক্তব্য প্রদান করেন কবি কাজী রোজী, শিল্পী ফকির আলমগীর, শিশুসাহিত্যিক লুৎফর রহমান রিটন, প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম, গবেষক আসাদুজ্জামান আসাদ, কবি পিয়াস মজিদ, কবি জাহিদুল হাসান এবং হুমায়ুন আজাদের অনুজ সাজ্জাদ কাদির ও হুমায়ূন আজাদের কন্যা মৌলি আজাদ। সভাপতিত্ব করেন প্রকাশক ওসমান গনি। বক্তারা বলেন, হুমায়ুন আজাদের হত্যাচেষ্টার বিচার অবিলম্বে বাস্তবায়ন এবং তাঁর আদর্শে মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমাজ-রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমেই তাঁকে যথাযোগ্যভাবে স্মরণ করা হবে।
আগামীকালের অনুষ্ঠান :
আগামীকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০/১৫ ফাল্গুন ১৪২৬ শুক্রবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২৭-তম দিন। মেলা চলবে সকাল ১১:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত, মেলায় ১১:০০টা থেকে ১:০০টা পর্যন্ত থাকবে শিশুপ্রহর।
বিকাল ৪:০০টায় অনুষ্ঠিত হবে আবুল কাসেম রচিত বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উন্নয়নদর্শন : জাতীয়করণনীতি এবং প্রথম পঞ্চমবার্ষিক পরিকল্পনা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ পাঠ করবেন অসীম সাহা। আলোচনায় অংশ নেবেন এম এম আকাশ এবং নাসিমা আনিস। সভাপতিত্ব করবেন আতিউর রহমান।
সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ