বাংলা একাডেমি আজ ২৪শে অগ্রহায়ণ ১৪২৬/৯ই ডিসেম্বর ২০১৯ সোমবার বিকেল ৪:০০টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে রোকেয়া দিবস ২০১৯ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। জাতীয় জাগরণে রোকেয়ার আত্মশক্তি শীর্ষক একক বক্তৃতা প্রদান করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পদার্থবিজ্ঞানী, লেখক-শিক্ষাবিদ অধ্যাপক অজয় রায়ের প্রয়াণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
স্বাগত বক্তব্যে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, রোকেয়ার আলোকপথে আমরা অন্ধকার ভেদ করে সম্মুখে অগ্রসর হয়েছি। একটি অসম সমাজব্যবস্থার ভেতর থেকে তিনি যেমন লড়াই করে নিজে মুক্ত হয়েছেন তেমনি এদেশের নারীদের দেখিয়েছেন মুক্তির পথরেখা।
একক বক্তা সেলিনা হোসেন বলেন, রোকেয়া ছিলেন অসাধারণ সৃজনী শক্তির অধিকারী। তিনি সমাজ ও শাস্ত্রের নারীবিরোধী অচলায়তনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। একই সঙ্গে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন আত্ম-অচেতন নারীসমাজকে। এর মধ্য দিয়ে তিনি নারী-পুরুষ উভয়ের জাগরণ-গান গেয়েছেন। নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে তিনি সামগ্রিক স্বাধীনতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করেছেন। তাঁর কাম্য সমাজ আজও প্রতিষ্ঠিত হয় নি, তাই তাঁর প্রাসঙ্গিকতার কোনো সমাপ্তি নেই। তিনি বলেন, রোকেয়া শিক্ষার মর্যাদাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছেন। কেবল বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকে তিনি শিক্ষা কার্যক্রমের মূল বিষয় মনে করেন নি তাই তাদের কুটিরশিল্পসহ স্বনির্ভরতার পথে উদ্বুদ্ধ করেছেন। অন্নবস্ত্রের জন্য যেন নারীকে কারও গলগ্রহ না হতে হয়, সেজন্য তিনি তাদের স্বাধীন বিকাশ ও উপার্জনের পথরেখা সন্ধান করতে বলেছেন। রোকেয়া যে সময়ে ও সমাজে নারী অধিকারের কথা ব্যক্ত করেছেন তা আজকের যুগের জেন্ডার-সমতারই পূর্বাভাস।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, চ‚ড়ান্ত রক্ষণশীল ও প্রতিক‚ল পরিবেশে বেড়ে ওঠেছেন বেগম রোকেয়া। এর মধ্যেও হতোদ্যম না হয়ে নিজেকে যেভাবে বিকশিত করেছেন তেমনি অবরুদ্ধ নারীদের জন্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং জাগরণমূলক রচনা ও কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির সহপরিচালক কাজী রুমানা আহমেদ সোমা।
রংপুরের পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের কর্মসূচি
রোকেয়া দিবস ২০১৯ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে রংপুরের পায়রাবন্দে বাংলা একাডেমি পরিচালিত বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
সকাল ৯:০০টায় বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্যে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সকাল ৯:৩০টায় রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রে আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য এইচ এন আশিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। সভাপতিত্ব করেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ আসিফ আহসান। সন্ধ্যা ৫:৩০টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের সংগীত প্রশিক্ষণার্থীবৃন্দ।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ