সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৬ August ২০১৯
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৮তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
প্রকাশন তারিখ
: 2019-08-06
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৮তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
বাংলা একাডেমি আজ ২২শে শ্রাবণ ১৪২৬/৬ই আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার বিকেল ৪:০০টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। রবীন্দ্রজীবনে ১৯১৯ : তাৎপর্যপূর্ণ একটি বছর উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট ও সাহসী অবস্থান শীর্ষক একক বক্তৃতা প্রদান করেন অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. মালেকা বেগম, পশ্চিমবঙ্গের গবেষক শক্তিসাধন মুখোপাধ্যায়, কবি লিলি হক প্রমুখ।
স্বাগত ভাষণে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ দিবসে তাঁকে স্মরণ করতে গিয়ে বলতে হয় জীবনের মতো মৃত্যুকেও তিনি আবিষ্কার করেছেন অমৃত করে কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন মহৎ মানবাত্মার কোনো বিলয় নেই। তিনি বলেন, আমরা আনন্দিত যে রবীন্দ্রনাথের ৭৮তম মৃত্যুবার্ষিকীর প্রাক্কালে বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত হল আহমদ রফিক প্রণীত রবীন্দ্র-জীবন ৪র্থ খণ্ড।
একক বক্তা অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকা-ের শতবর্ষপূর্তি হলো এবছর। ১৯১৯ সালে ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে চরম নৃশংস এই ঘটনা ঘটেছিল। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে রবীন্দ্রনাথের নাম। তিনি এই নৃশংসতার প্রতিবাদে ‘নাইট’ উপাধি পরিত্যাগ করেন। এ ঘটনাটি যেমন তাঁর দুরন্ত সাহসের উদাহরণ, তেমনি মানবজাতির প্রতি অসামান্য দায়বোধেরও পরম দৃষ্টান্ত। আরো একটি অনন্য ঘটনার জন্য ওই বছরটি রবীন্দ্রজীবনে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সেটি হলো : শান্তিনিকেতনের ব্রাহ্মচর্য বিদ্যালয়কে বিশ্বভারতীতে রূপান্তরিত করার যাত্রা শুরু আজ থেকে একশ বছর আগে, ১৯১৯ সালে। তিনি বলেন, বিশ্বভারতীর মধ্য দিয়ে যে বিশ্বাত্মবোধ রবীন্দ্রনাথ সৃষ্টি করতে চেয়েছেন, সেখানে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের জ্ঞানচর্চার মিলনই ছিল তাঁর একান্তভাবে কাম্য। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী শান্তি ও মানবিক মহত্ত্ব সৃষ্টিতে আকুল রবীন্দ্রনাথ জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকা-ের প্রতিবাদে নিজের শানিত অবস্থান ব্যক্ত করে মূলত তাঁর জীবনব্যাপী সাধনার শুভ পারম্পর্যকেই বজায় রেখেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে একাকী এবং সুদৃঢ় অবস্থান অন্যায়ের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের জীবনব্যাপী অঙ্গীকারেরই প্রমাণবহ। মনুষ্যত্বের অপমান নিজ দেশে কিংবা পৃথিবীর যেখানে সংঘটিত হয়েছে সেখানেই তিনি স্বাদেশিকতা-স্বাজাতিকতার ঊর্ধ্বে উঠে মানবিক আন্তর্জাতিকতাবাদের প্রেরণায় তার প্রতিবাদ করেছেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র-কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিক শিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন মহিউজ্জামান চৌধুরী এবং অণিমা রায়। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন এনামুল হক ওমর (তবলা), রিচার্ড কিশোর (গিটার) এবং এ বি এম তানভীর আলম সজীব (কী-বোর্ড)।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন একাডেমির সহপরিচালক সায়েরা হাবীব।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ