শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস ২০২০ দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা অনুষ্ঠান
বাংলা একাডেমি শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং মহান বিজয় দিবস ২০২০ উপলক্ষ্যে আজ ২রা পৌষ ১৪২৭/১৭ই ডিসেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার সকাল ১১.০০টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বুদ্ধিজীবীসহ একাত্তরের সকল শহিদ স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পান করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। সকাল ১১:০০টায় শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মরণ-অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন ডা. সারওয়ার আলী এবং সুব্রত বড়ুয়া। সকাল ১১:৪৫টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন অসীম কুমার উকিল এমপি এবং নাসির উদ্দীন ইউসুফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।
স্বাগত ভাষণে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বাংলা একাডেমি শহিদ বুদ্ধজীবীদের স্মৃতিকে অমর করে রাখতে প্রকাশ করেছে শহিদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ, শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মারকগ্রন্থ, নবপর্যায়ে পুর্নবিন্যস্ত চারটি খণ্ডে স্মৃতি : ১৯৭১ এবং শহিদ বুদ্ধিজীবীদের রচনাসমগ্র। পাকহানাদার বাহিনি ২৫শে মার্চ কালরাতে বাংলা একাডেমির ঐতিহাসিক বর্ধমান হাউসকে লক্ষ্য করে শেল নিক্ষেপ করে বাংলার বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক সূতিকাগারকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। কিন্তু বাংলা একাডেমি বাংলাদেশের মতই ধ্বংসের কালরাত পেরিয়ে স্বাধীনতার আভায় নতুন করে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
আলোচকবৃন্দ বলেন, পাকিস্তান সামরিক সরকারের সামগ্রিক বিনাশী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে একাত্তরে বাংলার বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। এই হত্যা বাংলার আপামর জনমানুষের উপর পরিচালিত গণহত্যার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত ছিল। ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার অপপ্রয়াস থেকেই এই হত্যাযজ্ঞ। তারা বলেন, ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আমরা মূলত হত্যা ও ধ্বংসের কালরাত পেরিয়ে আলোকিত সূর্যের দিকে অগ্রসর হয়েছি। তবে পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আবারও পাকিস্তানি অন্ধকারের দিকে বাংলাদেশকে ধাবিত করার চেষ্টা শুরু হয়। আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে একাত্তরের সেই পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অবমাননার মাধ্যমে আবারও তাদের আস্ফালন প্রকাশ করে চলেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, রাজনীতি ও বুদ্ধিবৃত্তিকতার অনন্য সমন্বয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনিবার্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছেন। তিনি বাংলার শ্রেষ্ঠ মনীষার চিন্তাধারাকে আত্মস্থ করে ধারাবাহিকভাবে এদেশের মানুষের মনে ভাষাভিত্তিক-জাতীয়তাবাদী-অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রকল্পনা জাগ্রত করেছেন এবং তারই পরিণতিতে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পিত স্বাধীনতা-যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কারণে এদেশের বুদ্ধিজীবীরা পাক-হায়েনাদের ভয়াবহ নৃশংসতার স্বীকার হয়েছেন এবং তাঁদের অসামান্য আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলার বিজয়কে তরান্বিত করেছেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস-২০২০ উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমি প্রযোজিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন একাডেমির উপপরিচালক ড. মোঃ শাহাদাৎ হোসেন।
অপরেশ কুমার ব্যানার্জী
পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ